দীর্ঘ ৮ দিন পর নোয়াখালীতে রোদের দেখা মিলেছে। ভাটায় পানি মেঘনা নদীতে নামতে শুরু করলেও এখনও পানিবন্দি আছেন ২০ লাখ মানুষ।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকালে সুবর্ণচরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে সূর্যের দেখা মেলে।
জেলা আবহাওয়া অফিস বলছে, গত ১৬ আগস্ট থেকে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে জলাবদ্ধতা বাড়ে এবং মুহুরী নদীর পানি প্রবেশ করায় তা বন্যায় রূপ নেয়। শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
জানা গেছে, টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীর বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে গেছে। পানিবন্দি হয়েছেন ২০ লাখ মানুষ। প্রায় ৪ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন ৪০ হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়া বন্যায় ভেসে গেছে ৮ উপজেলার কয়েক হাজার মাছের প্রজেক্ট, মুরগি খামার, আমনের বীজতলা, শাকসবজি খেত এবং ঝড়ো বাতাসে ভেঙে গেছে কাঁচা গাছপালা। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে কয়েকটি এলাকা।
সুবর্ণচরের বাসিন্দা মো. আবু সাইদ বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। সুবর্ণচরের আকাশে রোদের ঝলক দেখা যাচ্ছে। আমরা অনেক খুশি হয়েছি। আল্লাহ আমাদের সহায় হোক।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী বলেন, বৃষ্টিপাত, জোয়ার ও ফেনী থেকে আসা পানির চাপ সবকিছু মিলিয়ে কোম্পানীগঞ্জ মোটামুটি ভালো আছে। ভাটা শুরু হয়ে যাচ্ছে। সোনাগাজীর রেগুলেটর চালু হয়ে গেছে, মুছাপুরের রেগুলেটর চালু হবে কিছুক্ষণের মধ্যে। পানির প্রবাহ স্বাভাবিক আছে। দাঁগনভুইয়া অংশে পানির প্রেসার কিছুটা বাড়লেও সিলোনিয়া নদী দিয়ে পানি নির্গমন প্রবাহ পর্যাপ্ত আছে। আপাতত কিছুটা আশঙ্কা কমেছে। ভারী বৃষ্টিপাত এবং ভারতের পানির প্রেসারের ওপর নির্ভর করছে পরবর্তী বন্যা পরিস্থিতি কি হতে পারে।
সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কোম্পানীগঞ্জের প্রায় সবাই এখনও পানিবন্দি। আশ্রয়কেন্দ্রসহ আশপাশের সব পানিবন্দি মানুষের খোঁজ খবর রাখুন। বেশিরভাগ মানুষের রান্নাঘরেই এখন পানি। তাদের দিকে খেয়াল রাখবেন। সামাজিক সম্প্রীতির যে নজির গত দুই দিন আপনারা দেখিয়েছেন, এটি অব্যাহত রাখুন। আল্লাহ ভরসা।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, সূর্যের দেখা মেলায় আমরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি। তবে ৮ উপজেলার মানুষ এখনও পানিবন্দি। আমরা মানবিক সহায়তা হিসেবে ৫০৫ মেট্রিক টন চাল ও প্রায় ২৫ লাখ টাকা বিতরণ করেছি। পানিবন্দি ও বানভাসি মানুষের জন্য আমাদের ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত আছে।